ইউটিউব তাদের আধেয় বা কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। এখন থেকে কোনো ভিডিও ইউটিউবের নিয়ম লঙ্ঘন করলেও যদি সেটি জনস্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়, তবে সেটি না সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রিভিউয়ারদের।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইউটিউব গত ডিসেম্বরে তাদের অভ্যন্তরীণ নির্দেশনায় নতুন এ নীতিমালা যুক্ত করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোনো ভিডিওর অর্ধেকের বেশি অংশ যদি কমিউনিটি নির্দেশিকা (কমিউনিটি গাইডলাইন) লঙ্ঘন না করে, তাহলে তা ইউটিউব থেকে সরানোর প্রয়োজন নেই। আগে এই সীমা ছিল এক-চতুর্থাংশ।
নতুন নির্দেশনায় উদাহরণ হিসেবে যেসব বিষয়ের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে নির্বাচন, মতাদর্শ, আন্দোলন, জাতি, লিঙ্গ, যৌনতা, গর্ভপাত, অভিবাসন এবং সেন্সরশিপ। প্রশিক্ষণ কনটেন্টে রিভিউকারীদের (ভিডিও যাচাইকারীদের) বলা হয়েছে, মতপ্রকাশের অধিকার যদি কোনো ভিডিওর সম্ভাব্য ক্ষতির ঝুঁকির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে তা সরানো যাবে না। ভিডিওটি একেবারে সীমার কাছাকাছি হলে সেটি সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপককে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নতুন নীতির সূত্রপাত ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউটিউবের নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত থেকে। সেই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছিল, রাজনৈতিক প্রার্থীদের ভিডিও কনটেন্টে কোনো নিয়ম ভঙ্গ হলেও, তা যদি শিক্ষামূলক, প্রামাণ্যচিত্র, বৈজ্ঞানিক বা শৈল্পিক (ইডিএসএ) গুরুত্বসম্পন্ন হয়, তাহলে সেটি প্ল্যাটফর্মে রাখা যাবে।
এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এবং কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে ইউটিউব কঠোরভাবে কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ করত। তখন মাধ্যমটি কোভিড টিকা বা মার্কিন নির্বাচন সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া ভিডিওগুলো মুছে ফেলত। ২০২৩ সালে ইউটিউব এই অবস্থান থেকে এক ধাপ পিছু হটে। ওই বছর থেকে তারা আর মার্কিন নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ–সংবলিত ভিডিও সরানো বন্ধ করে দেয়। এবারকার পরিবর্তন আগের চেয়েও এক ধাপ শিথিল।
যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইন মাধ্যমগুলোর কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ নীতিতে সম্প্রতি শিথিলতার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ইউটিউবের এই পরিবর্তন তারই ধারাবাহিকতা। এর আগে মেটাও ঘৃণাত্মক বক্তব্য–সংক্রান্ত নীতিমালা শিথিল করেছে এবং তৃতীয় পক্ষের যাচাইপদ্ধতি (ফ্যাক্টচেকিং) বন্ধ করে এক্সের মতো কমিউনিটি নোট চালু করেছে।
সূত্র: দ্য ভার্জ