নতুন প্রজন্মের অনেকেই সঙ্গী খোঁজার ক্ষেত্রে ডেটিং অ্যাপের ওপর ভরসা রাখছেন। আর মনের মানুষ খোঁজার চাহিদায়, ডেটিং অ্যাপগুলোর জনপ্রিয়তাও আকাশছোঁয়া। অনলাইনে মনের মতো সঙ্গী পাওয়া যায় কিনা, তা আলোচনাসাপেক্ষ। তবে ডেটিং অ্যাপে পরিচয়ের পরে প্রেমের জোয়ারে ভেসে গিয়ে প্রতারণার শিকার হতে হয়েছে, এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে।
শুধু যে জীবনসঙ্গী খোঁজার তাগিদ থাকে, তা তো নয়। অনেকে একাকিত্ব ঘোচাতেও দ্বারস্থ হন এসব অ্যাপে। তবে এ ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করা মানেই যে প্রতারিত হওয়া, তা কিন্তু নয়। পাশাপাশি এটিও ঠিক যে, সতর্ক না থাকলে যে কোনো মুহূর্তে ফাঁদে পা পড়ে যেতে পারে। তাই সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন সাইবার আইন বিশেষজ্ঞরা। তাদের কথায়, ‘অনলাইন ডেটিং অ্যাপগুলোতে এখন ভয়ঙ্কর সব ঘটনা ঘটছে। তাই সামান্য অসতর্কতায় বিপদে পড়ার ঝুঁকি প্রবল। এমনকী আইনি জটিলতায় ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই এই ধরনের অ্যাপগুলো একান্তই ব্যবহার করতে হলে, চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।’
ডেটিং অ্যাপে কী কী বিপদ হতে পারে?
ক্যাট ফিশিং
ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করে প্রেমের জালে ফাঁসানোর নামই ‘ক্যাট ফিশিং’। সাইবার অপরাধীরা ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করে নিজেদের ভুয়া ছবি ও পরিচয় দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। তার পর কারও সঙ্গে আলাপ জমিয়ে আর্থিক প্রতারণা করে। সেই সঙ্গে মানসিক ভাবে হেনস্থার বিষয়টিও একেবারে ঝেড়ে ফেলা যায় না।
রোম্যান্স স্ক্যাম
প্রেমের জালে জড়িয়ে ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও তুলে তা দিয়ে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টাকে সাইবার আইনের ভাষায় ‘রোম্যান্স স্ক্যাম’ বলা হয়। পাশাপাশি আর্থিক প্রতারণার চেষ্টাও থাকে। সঙ্গী যদি কাতর স্বরে আপনার থেকে আর্থিক সাহায্য চায়, আপনি মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারবেন? আর বিশ্বাস করে টাকা দেওয়া মানেই ফাঁদে পা দেওয়া। তবে সব ক্ষেত্রে এমন নাও হতে পারে। তাই সতর্ক থেকে, সব দিক ভেবে তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্র্যাকটিস তৈরি করতে হবে।
স্পাইওয়্যার
ডেটিং অ্যাপগুলোকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে আপনার ফোনে ম্যালওয়ার ইনস্টল করেও দিতে পারে অপরাধীরা। বিশ্বাস অর্জন করার পরে কোনো লিং বা ছবি পাঠিয়ে ক্লিক করতে বলা হবে। আপনি ক্লিক করা মাত্রই আপনার ডিভাইসে স্পাইওয়্যার ইনস্টল হবে। এই স্পাইওয়্যার আপনার ফোনে থাকে সব ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে নেবে। এটিও এক ধরনের ‘ফিশিং’।
আর্থিক প্রতারণা
বিশ্বাস করে সব ব্যক্তিগত তথ্যসহ ব্যাংকের খুঁটিনাটি এমনকী ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য এক বার অপরাধীর হাতে তুলে দেন, তা হলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হতে খুব বেশি সময় লাগবে না। তা ছাড়া আপনার গোপন তথ্য চালান হয়ে যেতে পারে ‘ডার্ক ওয়েব’-এও। হ্যাকাররা সেই তথ্য কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্ম চালাবে।
এ ছাড়া আরও বড় অপরাধের ছকও থাকতে পারে। এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অনলাইন ডেটিং অ্যাপে প্রেমের জাল বিছিয়ে কোনো নির্দিষ্ট এলাকা বা ব্যক্তির গোপন তথ্য সংগ্রহ করেছে অপরাধী। সে ক্ষেত্রে খুব বড় ষড়যন্ত্রের চক্র থাকে। এক বার সেখানে ফেঁসে গেলে বড় বিপদ হতে পারে।
সূত্র: এই সময়