বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি প্রবাসে বৈধভাবে অর্থ পাঠানোর নিয়মে বড় একটি পরিবর্তন এনেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শিল্প ও সেবা খাতের সব ধরনের প্রতিষ্ঠান এখন থেকে তাদের বার্ষিক বিক্রির ১ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১ লাখ ডলার পর্যন্ত বৈদেশিক লেনদেনে অর্থ পাঠাতে পারবে। তবে এই সুবিধার আওতায় আসবে না ব্যাংক, বিমা, ক্ষুদ্রঋণ এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানায়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চলতি হিসাব দিয়ে বিদেশে পণ্য আমদানি অথবা সেবা গ্রহণের জন্য সর্বোচ্চ ১ লাখ ডলার পাঠানো যাবে। এই প্রক্রিয়া আগের চেয়ে সহজ, দ্রুত এবং সুবিধাজনক হবে।
এর আগে, এই সুবিধা শুধুমাত্র শিল্প ও কিছু নির্বাচিত সেবা খাতের জন্য ছিল, তবে নতুন নিয়মে ট্রেডিংসহ বিভিন্ন খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে বাণিজ্যিক সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যবসায়িক প্রয়োজনে দ্রুত ও সহজে বিদেশে অর্থ পাঠাতে পারবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই পদক্ষেপটি বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশে গতি আনবে এবং বৈশ্বিক লেনদেনে নতুন দিশা দেখাবে।
তবে, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের প্রজ্ঞাপনে সতর্কতা জারি করেছে। নতুন নিয়ম অনুসারে, অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক নিশ্চিত হতে হবে যে, টাকা প্রেরণের জন্য কোনো অতিরিক্ত অনুমোদন প্রয়োজন কিনা। যদি প্রয়োজন হয়, তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
এছাড়া, রয়্যালটি, প্রযুক্তি জ্ঞান ফি, টেকনিক্যাল সহায়তা ফি এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি সম্পর্কিত রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা ব্যবসা সম্প্রসারণে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিভিন্ন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অর্থ পাঠানো আরও সহজ ও নিরাপদ হওয়ার কারণে দেশের বৈদেশিক লেনদেনের প্রবাহে গতি আসবে।
তবে, বাংলাদেশ ব্যাংক স্পষ্ট করেছে যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো—যেমন বিমা কোম্পানি, পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান এবং মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান এই সুবিধার আওতায় থাকবে না।