হঠাৎ চোখে ঝাপসা দেখলে, মুখের একপাশ বেঁকে গেলে এবং কথা জড়িয়ে এলে যে রোগ আপনাকে গ্রাস করে তা হলো হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক। হৃদপিন্ডে হঠাৎ আক্রমণ করে এই রোগ।
সাধারণত পুরুষদের মধ্যে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীরা এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে। আর মেনোপজের পরে মহিলাদেরও এ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আবার নিকটাত্মীয়দের (বাবা-মা বা ভাইবোন) হৃদরোগ থাকলেও ঝুঁকি থাকে। এছাড়া ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ (উচ্চ রক্তচাপ) ও উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রাও হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ:
হঠাৎ মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া
বুকে ব্যথা বা শক্ত হওয়া
কথা জড়িয়ে যাওয়া বা একপাশ অবশ হয়ে যাওয়া
হঠাৎ মাথা ঘোরানো, চোখে ঝাপসা দেখা
বাহুতে বা কাঁধে, পিঠে, ঘাড়ে বা চোয়ালে অব্যক্ত ব্যথা
শ্বাসকষ্ট
দুর্বলতা, মাথা ঘোরা এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
বাম হাতে ব্যথা বা অবশভাব
বমি বা বমি বমি ভাবের সাথে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে।
যদি আপনার সন্দেহ হয় যে কারো হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, আপনার উচিত তাড়াতাড়ি একটি অ্যাম্বুলেন্স কল করা এবং প্রশিক্ষিত হলে CPR দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা।
হার্ট অ্যাটাক কিভাবে প্রতিরোধ করবেন?
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো অনেকটা একই রকম। সময়মত লক্ষণগুলি সনাক্ত করে রক্তনালীগুলিকে সচল রাখতে পারলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ সম্ভব।
১. স্বাস্থ্যকর খাবার খান
কম লবণ, চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার বেছে নিন।
ফল, সবজি, শস্য, বাদাম ও মাছ বেশি খান।
ট্রান্স ফ্যাট, প্রসেসড ফুড, এবং অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
২. নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, সাইকেল চালানো বা হালকা ব্যায়াম করুন।
বসে বসে থাকা বা অলস জীবনযাপন হার্টের ক্ষতি করে।
৩. উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন
নিয়মিত রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা করান।
প্রয়োজনে ওষুধ সেবন করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।
৪. ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করুন
ধূমপান ও তামাক হৃদযন্ত্র ও রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত করে।
অতিরিক্ত অ্যালকোহল রক্তচাপ ও চর্বির মাত্রা বাড়ায়।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
স্থূলতা (ওজন বেশি থাকা) হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ।
স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমান।
৬. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন
অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও উদ্বেগ হার্টের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, গভীর নিঃশ্বাস বা পছন্দের কাজে মন দিন।
৭. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড বা অন্য কোন সমস্যার থাকলে নিয়মিত চেকআপ করুন।
হার্ট অ্যাটাক (হৃদরোগ) ও স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বিঘ্ন) বর্তমানে প্রাণঘাতী ও সাধারণ স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম। তবে কিছু সহজ অভ্যাস ও সচেতনতা আপনাকে এই ভয়াবহ রোগগুলোর ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে সাহায্য করতে পারে।