নোয়াখালীর তরুণী নাছিমা আক্তার (২৪) কিছুদিনের জন্য ঢাকায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে তার বিয়ের আলাপ চলছিল কিন্তু মেহেদী রাঙানোর সৌভাগ্য আর হয়নি।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছাত্র আন্দোলনের সময় হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ঘটনায় এক বছর পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। নাছিমা নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানার মাইজদী বাজার এলাকার মৃত ইউছুপ মিয়ার মেয়ে।
রোববার বিকালে ধানমন্ডি মডেল থানার ওসি ক্যশৈন্যু মারমা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহতের ভাই হেলাল উদ্দিন সোলায়মান মামলাটি দায়ের করেন। এতে আরও ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ঢাকা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ১৯ জুলাই বিকালে ধানমন্ডি ১ নম্বর রোডের একটি ১০ তলা ভবনের ছাদে মামলার বাদী হেলাল উদ্দিন সোলায়মানের ছেলে আইমান উদ্দিন (২৩) এবং তার ছোট বোন নাছিমা আক্তার (২৪) অবস্থান করছিলেন। ওই সময় হেলিকপ্টার ও ড্রোন উড়তে দেখা যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি গুলি আইমানের বুকে লাগে এবং তা ভেদ করে পাশেই থাকা নাছিমার মুখে ঢুকে গলায় আটকে যায়।
এতে আরও বলা যায়, স্থানীয় বাসিন্দা ও নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় গুলিবিদ্ধ দুজনকে পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরদিন রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নাছিমা।
হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি স্পেন প্রবাসী। তখন যোগাযোগ বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে আমি জানতে পারি নাছিমাকে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়, যেখানে এক রাত মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে পরদিন বিকালে তিনি শহীদ হন।
তিনি বলেন, আমার ছেলে আইমান ১৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। পরে ৫ আগস্ট ছাড়পত্র পেয়ে বাসায় ফেরে। তার বুকে এখনো গুলির ক্ষত ও মানসিক ট্রমা রয়ে গেছে। আমি প্রবাস থাকায় মামলা করতে দেরি হয়েছে।