হার্ট অ্যাটাক সব সময় বুকে ব্যথা নিয়েই আসে না। এর নানা ধরনের উপসর্গ থাকতে পারে, যেগুলি অনেক সময়ই অন্য অসুস্থতার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা যায়। অথচ এই উপসর্গগুলো চিনে নেওয়াই একজনের জীবন বাঁচাতে পারে। চিকিৎসক অসীম ঢাল হার্ট অ্যাটাকের কিছু অস্বাভাবিক কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ সম্পর্কে জানিয়েছেন। যেগুলো সম্পর্কে সজাগ থাকা দরকার।
হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হল বুক চেপে ধরা মতো ব্যথা (অ্যাঞ্জাইনা)। কিন্তু সব সময় তা দেখা যায় না। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ, নারী এবং ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো একেবারেই ভিন্ন হতে পারে। এক মুহূর্তে আপনি একেবারে ভাল বোধ করবেন, আর পরের মুহূর্তেই হঠাৎ প্রবল ক্লান্তি, মাথা ঘোরা বা চোখে অন্ধকার দেখা দিতে পারে। এগুলো সাধারণত স্ট্রেস বা ক্লান্তির লক্ষণ ভেবে এড়িয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু আসলে শরীর সতর্ক সঙ্কেত দিচ্ছে।
সতর্ক হওয়ার উপসর্গ বুকের বাইরে ব্যথা: কেবল বুকেই নয়, ব্যথা হতে পারে কাঁধে, হাতে, পিঠে, ঘাড়ে, চোয়ালে এমনকি পেটে। অনেক সময় এই ব্যথা তীক্ষ্ণ, ছুরিকাঘাতের মতো বা পেশীর ব্যথার মতো মনে হতে পারে। ভুল করে মানুষ মনে করেন এটি বদহজম বা মাংসপেশির সমস্যা।
অজানা ক্লান্তি: হঠাৎ করে প্রবল এবং অস্বাভাবিক ক্লান্তি দেখা দেবে। সাধারণ ছোটখাটো কাজও করা কঠিন হয়ে পড়বে। এটি হার্ট অ্যাটাকের একটি সাধারণ কিন্তু প্রায়শই অবহেলিত উপসর্গ। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।
শ্বাসকষ্ট: কোনও স্পষ্ট কারণ ছাড়াই শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। এটি সাধারণ হাঁপ ধরা নয়, বরং মনে হবে যেন শরীর পর্যাপ্ত বাতাস পাচ্ছে না। অনেক সময় এটি বুকের ব্যথার সঙ্গে থাকে, আবার কখনও একাই দেখা দিতে পারে।
বমি বমি ভাব বা বমি: সাধারণত এটি পেটের সমস্যার মতো মনে হয়। কিন্তু যদি এর সঙ্গে ঘাম হওয়া বা শ্বাসকষ্টও যুক্ত হয়, তবে এটি হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত হতে পারে।ঠান্ডা ঘাম এবং মাথা ঘোরা: কোনও স্পষ্ট কারণ ছাড়াই হঠাৎ ঘাম হওয়া, সঙ্গে মাথা হালকা লাগা বা ভারসাম্য হারানো (ভার্টিগো) হার্টের সমস্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা হতে পারে।
আপনার শরীর আসলে সঙ্কেত দিচ্ছে। সেটিকে অবহেলা করবেন না। যদি অস্বাভাবিক ক্লান্তি, চোয়াল বা পিঠে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা ঘাম—এর মধ্যে যে কোনও একটি লক্ষণও দেখা দেয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যান। হৃদপিণ্ডকে ভাগ্যের উপর ছেড়ে দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।