সর্বশেষ
গাজায় কোন আন্তর্জাতিক বাহিনী ঢুকবে, তা ঠিক করবে ইসরায়েল : নেতানিয়াহু
পাঁচ বছর পর ভারত-চীনের সরাসরি ফ্লাইট চালু
রিয়ার অ্যাডমিরাল সোহায়েল কোথায়, জানালো কারা অধিদপ্তর
৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টিও পেলো হাতি মার্কা
প্রতিহিংসার রাজনীতির পরিহার করতে হবে: আমীর খসরু
সমাজমাধ্যমে অপপ্রচার, ৫০ কোটি টাকার মানহানি মামলা বিএনপি নেতার
বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন পরিচালক
মেট্রোরেলে দুর্ঘটনার পর আলোচনায় ‘বিয়ারিং প্যাড’: কী এটি, কেন এত গুরুত্বপূর্ণ
দেশ গঠনে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে: সেনাপ্রধান
আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বানিয়েছে জাতীয় পার্টি: আখতার
মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা, চাকরির আশ্বাস
একজনের নামে সর্বোচ্চ কয়টি সিম থাকবে জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জিমেইল হ্যাক হলে অ্যাকাউন্ট ফিরে পাবার উপায়
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর দাবিতে পে কমিশনে ইউট্যাবের স্মারকলিপি

কীভাবে বুঝবেন কেউ আপনাকে হিংসা করছে?

অনলাইন ডেস্ক

আমরা সবাই কখনও না কখনও হিংসার শিকার হই—বন্ধুদের মাঝে, অফিসে, এমনকি পরিবারেও। কিন্তু প্রশ্ন হলো—আপনি কীভাবে বুঝবেন, কেউ আসলেই আপনাকে হিংসা করছে? আজ আমরা ৫-৬টা লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করব, প্রতিটা বাস্তব উদাহরণ আর গল্প দিয়ে।”

১. তারা আপনার সাফল্যকে ছোট করে দেখাবে

যখনই আপনি কিছু অর্জন করেন—ভালো রেজাল্ট, প্রমোশন, বা ব্যবসায় অগ্রগতি—তারা বলবে, ‘ওহ, ভাগ্য ভালো ছিল’, বা ‘এ তো কিছু না, আমিও চাইলে পারতাম’।

এ নিয়ে তো গল্প আছে- দুই প্রতিবেশী। তো একজনের ছেলে পরীক্ষায় ভালো করেছে। শুনে আরেক প্রতিবেশী বলছে, পরীক্ষায় ফার্স্ট হলে কী হবে! চাকরি পাবে না। কিন্তু দেখা গেল চাকরি পেয়েছে। তখন বলছে, চাকরি পেলে কী হবে। বেতন পাবে না। দেখা গেল- বেতনও পেয়েছে। এরপর কী বলবে। দেখা গেল- এরপরও সে বলছে, ঐ টাকা চলবে না।

মানে তারা সাফল্যাকে ছোট করে দেখবে। মন থেকে তারা কখনও খুশি হবে না।

২. আপনার অনুপস্থিতিতে খারাপ কথা বলবে

হিংসুক মানুষ আপনার সামনে মিষ্টি, কিন্তু পেছনে নেতিবাচক কথা বলবে।

এক অফিসে নতুন কর্মী খুব দ্রুত বসের কাছে প্রশংসা পেল। তার সহকর্মীরা সামনে হাসি-ঠাট্টা করত, কিন্তু পরে শোনা গেল—তারা পিছনে বলত, ‘ও তো বসকে খুশি করতে জানে, তাই প্রশংসা পাচ্ছে। সে যে পরিশ্রম করে, তার যোগ্যতা দিয়ে এই অর্জন করেছে, সেটা তারা স্বীকার করবে না।

৩. আপনার ব্যর্থতায় তারা খুশি হব

হিংসুকরা অপেক্ষা করে—আপনি যেন হোঁচট খান। আপনার সামান্য ভুলে তাদের চোখে আনন্দ দেখা যায়।

এক ফুটবল খেলোয়াড় ম্যাচে অসাধারণ খেলছিল। কিন্তু হঠাৎ শেষ মুহূর্তে একটি গোল মিস করল। তার এক টিমমেট তখন বলল, ‘আমি আগেই জানতাম, তোকে দিয়ে হবে না।’—এটা আসলে তার ভেতরের ঈর্ষার প্রকাশ।”

৪. তারা আপনাকে নকল করবে, কিন্তু স্বীকার করবে না

হিংসুকরা আসলে আপনার মতো হতে চায়, কিন্তু মুখে স্বীকার করে না।

এক বান্ধবী সুন্দর পোশাক ডিজাইন করে কাস্টমারদের কাছে জনপ্রিয় হলো। সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হল। তার এক বান্ধবী গোপনে একই ডিজাইন কপি করে অনলাইনে বিক্রি শুরু করল। যখন জিজ্ঞেস করা হলো, সে বলল, ‘ওর থেকে নকল করিনি, এটা আমার নিজের আইডিয়া।’—এটাই হিংসার আরেক রূপ।”

৫. আপনার সুখে তাদের অস্বস্তি হবে

আপনি যখন খুশি, সফল, আনন্দে ভাসছেন, তারা সেটা হজম করতে পারে না। ধরেন, আপনি চাকরিতে প্রমোশন পেয়ে সবাইকে দাওয়াত করেছেন। অনেকেই এসেছে। কিন্তু দুয়েকজন আসে নি। বা এলেও খুব চুপচাপ, মনমরা। সে আসলে আপনার সাফল্যে খুশি হয় নি।

৬. তারা আপনাকে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতায় নামাবে

হিংসুকরা চায় সবসময় আপনাকে হারাতে। দুই ভাই একসাথে পড়াশোনা করত। ছোট ভাই পরীক্ষায় ভালো করলে বড় ভাই বলত—‘দেখিস, আগামীবার আমি তোকে পেছনে ফেলব।’ এটা প্রতিযোগিতা নয়—ভাইয়ের অর্জনকে নিজের হুমকি মনে করা।”

এদেরকে ডিল করবেন কীভাবে?

হিংসুক মানুষকে সামলানো একটা আর্ট। সরাসরি ঝগড়া করলে সম্পর্ক খারাপ হবে, আবার তাদের কথায় ভেঙে পড়লেও নিজের ক্ষতি। তাই কিছু কৌশল কাজে লাগাতে হবে।

হিংসুক মানুষকে ডিল করার ৬টি কার্যকর উপায়

১. তাদের স্বীকৃতি খোঁজা বন্ধ করুন

হিংসুক মানুষ কখনও আপনাকে খোলাখুলি প্রশংসা করবে না। তাই তাদের কাছ থেকে স্বীকৃতি চাইবেন না। নিজের কাজের আনন্দ নিজেই নিন, প্রকৃত বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীর কাছ থেকে উৎসাহ নিন।

২. নিজের সাফল্য খুব বেশি প্রচার করবেন না

কিছু মানুষ আপনার সাফল্য হজম করতে পারে না। উদাহরণ: অফিসে প্রমোশন পাওয়ার পর কেউ কেউ আনন্দ করবে, কেউ আবার ভেতরে জ্বলবে। তাই সব জায়গায় “শো অফ” না করে, সাফল্য ভাগ করুন সীমিতভাবে।

৩. শান্ত থাকুন, তর্কে যাবেন না

হিংসুকরা আপনাকে প্ররোচিত করবে—“তুমি এটা পারবে না”, “তুমি ভাগ্যবান ছিলে” ইত্যাদি। হাসি দিয়ে উড়িয়ে দিন। ব্যাখ্যা দিতে বা প্রমাণ করতে যাবেন না। সময়ই প্রমাণ করবে।

৪. নিজের কাজে ফোকাস রাখুন

তাদের কথায় মন খারাপ করলে আপনার কাজের ক্ষতি হবে। মনে রাখুন: ঈর্ষা হচ্ছে আপনার শক্তিরই প্রমাণ। কেউ হিংসা করছে মানে আপনি এগিয়ে যাচ্ছেন।

৫. সীমারেখা টেনে নিন (Set Boundaries)

সবাইকে নিজের অন্তরঙ্গ জীবনে ঢুকতে দেবেন না।
যেমন—ব্যক্তিগত জীবন, আয়, স্বপ্ন ইত্যাদি সবকিছু সবার সামনে বলার দরকার নেই। এতে হিংসুকদের আক্রমণের সুযোগ কমবে।

৬. দয়া করুন, ঘৃণা নয়

হিংসুক মানুষ ভেতরে আসলে দুর্বল। ইসলামেও বলা হয়েছে, “হিংসা করলে আমল পুড়ে যায় যেমন আগুন কাঠকে খেয়ে ফেলে।” তাই তাদের প্রতি করুণা রাখুন—কিন্তু তাদের বিষাক্ততা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলুন।

মনে রাখবেন—হিংসুক মানুষের সাথে যুদ্ধ করে কোনো লাভ নেই। তাদের এড়িয়ে চলতে হবে, সীমারেখা টানতে হবে, আর নিজের কাজে লেগে থাকতে হবে। কারণ শেষ পর্যন্ত বিজয় তাদেরই হয় যারা নিজের আলো দিয়ে চারপাশ আলোকিত করে, অন্যের অন্ধকার নিয়ে ব্যস্ত হয় না।

তাই কারো হিংসার শিকার হলে নিজেকে গুটিয়ে নেবেন না। বরং নিজের কাজ চালিয়ে যান, নিজের উন্নতির পথে থাকুন।

আর হিংসার এই ৬টা কারণের মধ্যে কোন লক্ষণ আপনি নিজের জীবনে সবচেয়ে বেশি দেখেছেন? কমেন্টে লিখুন। আর আপনি কীভাবে তাদের ডিল করেছেন, তাও লিখতে পারেন। ভালো থাকুন, অনুপ্রেরণায় থাকুন।”

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ