রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের ‘বিয়ারিং প্যাড’ পড়ে এক পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় সারাদেশে আলোচনায় এসেছে এই রেলের কাঠামোর বিষয়টি।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ফার্মগেট মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত পথচারীর নাম আবুল কালাম (৩৫), তার বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামে।
দুর্ঘটনার পর দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত অংশে ট্রেন চলাচল পুনরায় চালু করা হয়।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল, তখন আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। তখন প্রাণহানি না ঘটলেও এবারের দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যুতে বিয়ারিং প্যাডের নিরাপত্তা ও মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিয়ারিং প্যাড কী
‘বিয়ারিং প্যাড’ হচ্ছে রাবার ও ইস্পাতের স্তরযুক্ত একটি ইলাস্টোমেরিক প্যাড, যা উড়াল সেতু বা মেট্রোরেল ভায়াডাক্টের পিলার ও ট্র্যাকের সংযোগস্থলে বসানো হয়।
এর মূল কাজ হলো—
কম্পন ও ঝাঁকুনি প্রতিরোধ করা,
কাঠামোর ভারসাম্য রক্ষা করা এবং
দীর্ঘমেয়াদে অবকাঠামো ক্ষয় রোধ করা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিটি বিয়ারিং প্যাডের ওজন প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি। এটি সঠিকভাবে বসানো না হলে কাঠামোর স্থায়িত্বে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়।
তবে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বুয়েট। ২০২০ সালে এটির মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে। বুয়েটের পরীক্ষায় দেখা যায়, প্রকল্পের উত্তরা-আগারগাঁও অংশে ব্যবহারের জন্য আমদানি করা বিয়ারিং প্যাডের একটি অংশ মানোত্তীর্ণ নয়।
বিশেষ ধরনের রাবার দিয়ে তৈরি বিয়ারিং প্যাড বসানো হয় পিয়ার ও উড়ালপথের সংযোগস্থলে, যা পুরো কাঠামোর স্থায়িত্ব ও ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলো সরবরাহ করেছিল প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। মান খারাপ প্রমাণিত হওয়ায় নতুন প্যাড আমদানি করতে হয়, ফলে প্রকল্পের সময়সূচিতে দেরি ঘটে।






