সকালে ঘুম থেকে উঠে চা-কফি না খেয়ে একটা-দুটো লবঙ্গ খেয়ে দিন শুরু করতে পারেন। লবঙ্গ হচ্ছে চিরসবুজ গাছের শুকিয়ে যাওয়া ফুল, যা কথ্য ভাষায় লং নামেও পরিচিত। এটি মূলত একটি মসলা, যা খাবারের স্বাদ ও ফ্লেভার বাড়ানোর জন্য রোজ ব্যবহৃত হয়।
এছাড়া মসলাটির রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যগুণ। বিশেষ করে এতে থাকা ‘ইউজেনল’ নামের একটি উপাদান লবঙ্গকে করে তোলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং রোগপ্রতিরোধে দারুণ কার্যকর। চলুন একনজরে এই ঔষধি গুণসম্পন্ন মসলার উপকারিতাগুলো দেখে নেওয়া যাক।
হজমে সহায়ক: লবঙ্গ হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য বা বদহজমের সমস্যা থাকলে উপকার পেতে পারেন।
দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়: লবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে। এ ছাড়া এতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনোলিক যৌগ আর ভিটামিন সি। এই অ্যান্টি–অক্সিডেন্টগুলো ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তা ছাড়া কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায় লবঙ্গ।
বয়সের ছাপ কমায়: লবঙ্গের মধ্যে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখে।
দাঁত ও মুখের জন্য উপকারী: দাঁতের সমস্যা সমাধানের জন্য বহু শতাব্দী ধরে লবঙ্গ ব্যবহার হয়ে আসছে। লবঙ্গে থাকা ইউজেনল একটি প্রাকৃতিক ব্যথানাশক আর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে এটি দাঁত ও মাড়ির ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়। এটি মুখের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
লিভার ও পিত্তাশয়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: লবঙ্গ লিভার এবং পিত্তাশয়ের কার্যক্রম ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
মাথা ব্যথা কমায়: লবঙ্গ মাথা ব্যথা বা মাইগ্রেনের উপশমে সহায়তা করতে পারে। এটি শান্তি প্রদান করে এবং ব্যথা কমায়। রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে: রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: লবঙ্গের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট আর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এটি রক্তচাপ কমাতে, রক্তনালীর কার্যকারিতা ভালো রাখতে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
ঠাণ্ডা-কাশি কমায়: রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে লবঙ্গ ঠাণ্ডা, কাশি বা ফ্লুর মতো সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করে: লবঙ্গ মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দারুণ। দাঁতের মাড়িও করে তোলে শক্ত।
এছাড়া ব্রেনের কোষের প্রদাহ ও স্ট্রেস থেকে রক্ষা, মানসিক চাপ, মাথাব্যথা, পেটের আলসার, রক্ত পরিষ্কার ও ওজনতেও ভূমিকা রাখে এই লবঙ্গ। তবে অতিরিক্ত খাওয়ার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, বিশেষ করে গ্যাস, বদহজম বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা হলে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে।
								
								
															
								







