ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পৃথক গণপিটুনিতে দুইজনকে হত্যার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পত্র-পত্রিকার বরাতে দেখা যাচ্ছে, হত্যাকাণ্ডের সময় এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নীরব ও নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতেই পুরোনো ফ্যাসিবাদী কায়দায় নির্যাতন করে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর এবং পরবর্তীতে থানায় পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে। এ দুটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি কোনোভাবে দায় এড়াতে পারেন না। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিবাদী কায়দায় এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
জাতীয় নাগরিক কমিটি মনে করে, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মব-ভায়োলেন্সের মতো সকল ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ও উপাদানের শিগগিরই বিলোপ করতে হবে এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সূচনা করতে হবে। আমরা মনে করি, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং সকল অপরাধের বিচারের দায়িত্ব আদালতের। যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে তারা অপরাধ করছে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে বলে আমরা মনে করি।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘দেশজুড়ে মব-লিঞ্চিং, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মাজার ও মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জানান দিচ্ছে। জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশের দিন থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। ৫ আগস্টের পরও এমন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে, ফ্যাসিবাদী হাসিনার পতন হলেও ফ্যাসিবাদী কাঠামো ও ব্যবস্থা এখনো বহাল তবিয়তে আছে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদাসীনতা এবং বিভিন্ন হামলার পরেও যথাযথ আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে এ ধরনের মব-ভায়োলেন্সের পুনরাবৃত্তি ঘটছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এরই মধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম গণপিটুনিতে জড়িতদের চিহ্নিত করেছে এবং নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সাবেক পদধারী নেতাদের দেখা যাচ্ছে। দুটি হত্যাকাণ্ডে যে ব্যক্তিরাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জোরালো দাবি জানায় জাতীয় নাগরিক কমিটি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের অকার্যকর ও নিষ্ক্রিয় ভূমিকার জবাবদিহি চায়। নতুবা অচিরেই গণঅভ্যুত্থানের শক্তি দেশের আপামর জনতার স্বার্থকে সুরক্ষিত করতে রাজপথে সক্রিয় কর্মসূচি পালন করবে।