সর্বশেষ
বোরো ধানের নমুনা শস্য কর্তন শুরু
ওটিটিতে মুক্তি পেল তাসনিয়া ফারিণের প্রথম সিনেমা
ভিসা ইস্যু নিয়ে যে বার্তা দিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে: রিজভী
কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হচ্ছেন চার নারী ক্রীড়াবিদ
হিন্দু নেতাকে অপহরণের পর হত্যা, যা বলল ভারত
আওয়ামী লীগের মিছিল নিয়ে কড়া বার্তা হাসনাতের
এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: নাহিদ ইসলাম
দেরি করে পৌঁছানোয় স্বপ্নভঙ্গ ওদের
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ
নির্বাচনের জন্য এখনই আন্দোলনের প্রয়োজন দেখছে না বিএনপি
বিলাসবহুল অফিস ও বন্দর কমিটি নিয়ে যা বললেন হান্নান মাসউদ
শাহজাদপুরে যুবদল কর্মীকে হত্যার অভিযোগ
ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া প্রমাণ করে ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়: দুদু
‘শুভ কাজে সবার পাশে’ স্লোগানে বসুন্ধরা শুভসংঘের মনপুরা উপজেলা কমিটি গঠিত

আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ৩৩% ঋণ এখন খেলাপি

অনলাইন ডেস্ক

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে খেলাপি ঋণ আরও বেড়েছে। গত জুন শেষে এ খাতের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৭১১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা, যা ছিল ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা ঋণের ২৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। এ হিসাবে ছয় মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বাড়ছে বেশি। এর অন্যতম কারণ, অনেক আগ থেকেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত খেলাপি ঋণ দেখানোর জন্য চাপাচাপি থাকলেও ব্যাংকের ক্ষেত্রে এ প্রবণতা শুরু হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। ব্যাংক খাতে গত ৬ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ৬৬ হাজার কোটি টাকা। গত জুন শেষে ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ ছিল ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা যা ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। আইএমএফের ঋণ পেতে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমানোর শর্ত রয়েছে।  বেসরকারি ব্যাংকের মোট ঋণের ৫ শতাংশ এবং সরকারি ব্যাংকের ১০ শতাংশের নিচে নামানোর শর্ত দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী তহবিল সংকটের কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঋণ সেভাবে আর বাড়ছে না। গত জুন শেষে এসব প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ঋণ ছিল ৭৩ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। আর ২০২২ সাল শেষে ছিল ৭০ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা। ওই সময়ে খেলাপি ঋণ ছিল ১৬ হাজার ৮২১ কোটি টাকা যা ছিল মোট ঋণের ২৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এর মানে গত দেড় বছরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ বেড়েছে মাত্র ৪ হাজার ৯৮ কোটি টাকা। যেখানে খেলাপি বেড়েছে ৭ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা। এর মানে ঋণের তুলনায় খেলাপি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, বেশ আগ থেকে ১০টির মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠান আমানতকারীর অর্থ যথাসময়ে ফেরত দিতে পারছে না। ফলে পুরো খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ব্যাংকের তুলনায় অনেক বেশি সুদ দিয়েও বেশির ভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশিত আমানত পাচ্ছে না। ব্যক্তি পর্যায়ের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক আমানতও পাচ্ছে না। যে কারণে নতুন ঋণ দেওয়া তো দূরে থাক, কোনো মতো এসব প্রতিষ্ঠান টিকে আছে। অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন ১১ থেকে ১২ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। গত জুলাইতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের গড় সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত বেশ আগে থেকেই খারাপ অবস্থায় ছিল। তবে আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে না পারাসহ বিভিন্ন কারণে ২০১৯ সালে পিপলস লিজিং অবসায়নের উদ্যোগ সামনে আসার পর পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়। এর মধ্যে প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) দখল করা বিআইএফসি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও এফএএস ফাইন্যান্সের নানা জালিয়াতি সামনে আসে। এসব নিয়ে আলোচনার মধ্যে
পুরো খাতের প্রতি গ্রাহকের আস্থা কমে যায়। আস্থা বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য অনেক ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাবেক সচিব ফজলে কবির বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নানা শিথিলতার মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর সংস্কৃতি শুরু হয়। আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হয়ে এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন। দীর্ঘদিন ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের দায়িত্বে থাকা আবু ফরাহ মো. নাছের বিভিন্ন নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আড়ালের সুযোগ করে দেন। এ ক্ষেত্রে কখনও বিশেষ ব্যবস্থায় ঋণ পুনঃতপশিল, কখনও পুনর্গঠন এবং কখনও ঋণ পরিশোধ না করেই নিয়মিত থাকার সুযোগ তৈরি করে দেন। ব্যাংকে এতদিন এ রকম নানা ছাড়ে খেলাপি কম দেখানোর সুযোগ দেওয়া হয়। তবে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত মেনে এখন বেশ কিছু নিয়ম কঠোর করতে হয়েছে। বিশেষ ছাড়ে এখন আর ঋণ নিয়মিত হচ্ছে না। এ ছাড়া মেয়াদি ঋণ খেলাপি করায় বিশেষ শিথিলতা উঠে যাচ্ছে।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ