কোনো মাসে পিরিয়ড না হওয়াকেই গর্ভধারণের প্রথম লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়; কিন্তু অনেক সময় পিরিয়ডের হিসাব রাখা সম্ভব হয় না বা পিরিয়ড নিয়মিত হওয়া সত্ত্বেও অনেকে গর্ভধারণ করেন। এ ছাড়া এ সময় শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন ও লক্ষণ দেখা দেয়।
- বমি বমি ভাব বা গা গোলানো গর্ভধারণের প্রথম দিকের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। গর্ভধারণের চার–পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত বমির ভাব বেশি দেখা যায়। সাধারণত সকালবেলায় ঘুম থেকে ওঠার পর বমিভাব বা বমি বেশি হয়ে থাকে বলে একে মর্নিং সিকনেস বলে।
- গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহে অথবা তারপর থেকে স্তন ফুলে যাওয়া, ভারী হওয়া অথবা স্তনে ব্যথা অনুভূত হওয়া;
- ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ। সাধারণত গর্ভবতী মায়েদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের জন্য এমন হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংক্রমণের কারণেও এমন হতে পারে।
- শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি। সাধারণত গর্ভধারণকালে শরীরে প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। তবে সর্দি, কাশি বা অন্যান্য রোগের সংক্রমণেও শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
- ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভূত হওয়া। শরীরে বিভিন্ন হরমোনের তারতম্য, ক্ষুধামান্দ্য ও কম খাওয়ার কারণে এই দুর্বলতা হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় কখনো কখনো অনিয়মিত রক্তপাত, স্পটিং ও তলপেটে ব্যথা হতে পারে। এসব লক্ষণ অনেক সময় গর্ভপাত, অ্যাক্টপিক প্রেগন্যান্সি ও মোলার প্রেগন্যান্সির ক্ষেত্রেও দেখা যায়।
- গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে ক্ষুধামান্দ্য ও অরুচির সমস্যায় ভোগেন অধিকাংশ নারী। পছন্দের খাবারও অনেকে স্বাভাবিকভাবে খেতে পারেন না। সাধারণত শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণেই এ ধরনের সমস্যা হয়।
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি প্রস্রাব করেন অনেকে। গর্ভাবস্থায় শরীরে রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এ সময় কিডনি অধিক পরিমাণে তরল নিঃসরণ করতে শুরু করে। অন্যদিকে জরায়ুর আয়তন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রস্রাবের থলির ওপর চাপ পড়ে, ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়।
- গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য। শরীরে হরমোনের প্রভাবে পরিপাক কাজে ধীরতা, অপর্যাপ্ত পানি, শাকসবজি ও খাদ্য গ্রহণ অন্যতম কারণ।
- মাথাব্যথা অনুভূত হওয়া। গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে রক্ত সঞ্চালন ও হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে এমন হতে পারে।
করণীয় কী
- গর্ভধারণের লক্ষণ দেখা দিলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নিশ্চিত হোন।
- চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন ও নির্দেশনা অনুযায়ী ওষুধ নিন।
- অল্প মাত্রার লক্ষণ ঘরোয়া উপায়ে সমাধানের চেষ্টা করুন।
- খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনুন, যেমন কাঁচা ও কম সেদ্ধ খাবার, ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার পরিহার করুন। ধূমপান, অতিরিক্ত চা ও কফি পান, মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।
- লক্ষণগুলোর তীব্রতা বেশি হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।