সর্বশেষ
বোরো ধানের নমুনা শস্য কর্তন শুরু
ওটিটিতে মুক্তি পেল তাসনিয়া ফারিণের প্রথম সিনেমা
ভিসা ইস্যু নিয়ে যে বার্তা দিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে: রিজভী
কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হচ্ছেন চার নারী ক্রীড়াবিদ
হিন্দু নেতাকে অপহরণের পর হত্যা, যা বলল ভারত
আওয়ামী লীগের মিছিল নিয়ে কড়া বার্তা হাসনাতের
এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: নাহিদ ইসলাম
দেরি করে পৌঁছানোয় স্বপ্নভঙ্গ ওদের
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ
নির্বাচনের জন্য এখনই আন্দোলনের প্রয়োজন দেখছে না বিএনপি
বিলাসবহুল অফিস ও বন্দর কমিটি নিয়ে যা বললেন হান্নান মাসউদ
শাহজাদপুরে যুবদল কর্মীকে হত্যার অভিযোগ
ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া প্রমাণ করে ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়: দুদু
‘শুভ কাজে সবার পাশে’ স্লোগানে বসুন্ধরা শুভসংঘের মনপুরা উপজেলা কমিটি গঠিত

শেয়ারবাজার সূচকের পতন শতক ছাড়িয়েছে

অনলাইন ডেস্ক

শেয়ারবাজারে আজ রোববারও ব্যাপক দরপতন হচ্ছে। অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনের কারণে আজ দুপুর ১টায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১০৮ পয়েন্ট হারিয়ে ৫০০৬ পয়েন্টে নামতে দেখা গেছে। সূচক পতনের হার ২ দশমিক ১১ শতাংশ।

এ সময় ৪৭ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিপরীতে ৩১৬টিকে দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ৯০ কোম্পানির শেয়ার।

শুধু দরপতনই নয়, এ সময় অর্ধ শত কোম্পানির শেয়ার দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। এর অনেকগুলোর ক্ষেত্রে শেয়ার ক্রেতাশূন্য অবস্থায় ছিল।

এ দরপতন শুধু আজ নয়, গত ১২ আগস্ট থেকে আড়াই মাস ধরে চলছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।

দরপতনের কারণে লেনদেনও কমছে। আজ লেনদেনের প্রথম তিন ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৮৪ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার লেনদেনের পুরো সাড়ে চার ঘণ্টায় ৩০৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল।

শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, অতীতের অনিয়ম-দুর্নীতির ফল এখন ভোগ করছে শেয়ারবাজার।

একদিকে টাকা ছাড়া শেয়ার ইস্যু হয়েছে। ওই শেয়ার কোম্পানির মালিকরা প্রক্রিয়ায় প্লেসমেন্ট আকারে বিক্রি করেছে। প্রভাবশালীরাও ভাগ নিয়েছে। অন্যদিকে কারসাজি করে শেয়ার দর বাড়িয়েছে কয়েকটি চক্র। বছরের পর বছর বিনিয়োগকারীরা তাদের অনুসরণ করে শেয়ার কেনাবেচা করেছেন। এখন কারসাজি চক্র নেই। অন্যদিকে কারসাজির চক্রের দেখাদেখি যারা শেয়ার কেনাবেচা করতেন, তারাও দিশা পাচ্ছেন না। ফলে দরপতন অবসম্ভাবী হয়ে উঠেছে- এমন মত শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকদের।

বিশ্লেষকরা আরও জানান, বাজারের এসব অনিয়মের সঙ্গে সরকারও ঊচ্চ কর আরোপ করে। ক্যাপিটাল গেইন ৫০ লাখ টাকার ওপর হলেই ৩০ শতাংশ কর আরোপ করেছে। করদাতা সম্পদশালী হলে তাদের সারচার্জসহ কর হয় সাড়ে ৪০ শতাংশ। এমন কর ব্যবস্থার কারণে অনেক বড় বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়েছেন।

তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এ অবস্থায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির একের পর এক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং তদন্তের উদ্যোগকে এ দরপতনের জন্য দায়ী করছেন। তারা পতন রুখতে এ সংস্থার হস্তক্ষেপও দাবি করছেন। তবে বিএসইসির পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অতীতের অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া তাদের বিকল্প নেই। কারণ আইন এ সংস্থাকে এ দায়িত্বই দিয়েছে।

তাছাড়া দরপতনে শেয়ারবাজারে হস্তক্ষেপ করা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজ নয় বলেও সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট জানিয়েছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি বলেন, অতীতে বিএসইসি পতন রুখতে নানা কৃত্রিম ব্যবস্থা আরোপের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করেছিল। ওইসব পদক্ষেপ কখনো ভালো ফল দেয়নি। উল্টো আরও খারাপ হয়েছে। তাই নতুন কমিশন পুরনো ধারায় ফিরবে না।

বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম সমকালকে জানিয়েছেন, বাজারে তারল্যসংকট আছে। এ সমস্যার সমাধানে অর্থমন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবিকে যে কোনো উপায়ে অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়, যাতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার কিনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলতি দরপতনের জন্য দায় বিগত সরকারের ১৫ বছরে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই ১৫ বছরে অনিয়মের মাধ্যমে অস্তিত্বহীন এবং দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার তালিকাভুক্ত করা এবং কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের দর অস্বাভাবিক পর্যায়ে উঠানো হয়েছিল। কৃত্রিম ব্যবস্থা দিয়ে পতন ঠেকানোর ব্যবস্থাও করা হয়। এখন কোম্পানিগুলোর প্রকৃত অবস্থা বের হতেই দরপতন হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তাও সমকালকে একই যুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেন, অনিয়ম করে টাকা ছাড়াই শেয়ার ইস্যু করেছিলেন কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার জন্য বিভিন্ন প্রভাবশালীদেরকেও বিনা টাকায় শেয়ার দেওয়া হয়েছিল। বহু শেয়ার প্রাইভেট প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় বিক্রি হয়। ওই সব শেয়ার বিক্রি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের টাকা লুট হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা জানান, অনিয়মের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আসা শেয়ারগুলোর যখন দরপতন শুরু হয়েছে, তখন ফ্লোর প্রাইসের মত কৃত্রিম ব্যবস্থা দিয়ে দরপতন ঠেকিয়ে রাখা হয়। ওই কৃত্রিম ব্যবস্থা তুলে নিতে এখন দরপতন হচ্ছে।

সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এরই মধ্যে আইসিবি ৩ হাজার কোটি টাকার সভরেন গ্যারান্টি চেয়ে আবেদন করেছিল। আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই গ্যারান্টিপত্র ইস্যু করবে, যাতে এ গ্যারান্টি পত্র দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগের জন্য টাকা সংগ্রহ করতে পারে।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ