সর্বশেষ
একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ প্রকল্প অনুমোদন
যে ফলগুলো খেলে গরমে আপনার চুল ভালো থাকবে
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত সুফিউর
শেখ হাসিনার তদন্ত প্রতিবেদন ২৪ জুনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ
বাংলাদেশ-চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রয়াস
রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা হয়নি, জুনে নির্বাচন নিয়ে সংশয়
মেট্রোরেলের র‍্যাপিড পাসও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায়, ভোগান্তি যাত্রীদের
নারী বিশ্বকাপে খেলতে ভারতে যাবে না পাকিস্তান
৩ মে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশের ডাক
সিইসির সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছে এনসিপি
ক্যাস্ট্রলের আফটারমার্কেট ডিস্ট্রিবিউটর রক এনার্জি
রাজনৈতিক বিবেচনায় আর কোনো নতুন ব্যাংক নয়
বিএনপি-এনসিপির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, প্রশাসন আসলেই কার পক্ষে?
৮ মাস পর খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল  
সাবেক ১১ মন্ত্রীসহ ১৯ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির

কলার অজানা উপকারিতা

অনলাইন ডেস্ক

সারা পৃথিবীজুড়ে কলা একটি জনপ্রিয় ফল। আমাদের দেশে কলা হল একমাত্র ফল, যা সারাবছর সুলভে পাওয়া যায়। বাড়িতে ৭ মাসের বাচ্চা থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধ- সবার জন্যই উপকারী হল কলা। কেউ খান ব্রেকফাস্টে ওটস বা কর্নফ্লেক্সের সঙ্গে। কেউ খান দুধ ভাত দিয়ে মেখে আবার কেউ রুটির সঙ্গে।

কলার বৈজ্ঞানিক নাম হলো মুসা সেপিয়েনটাম। এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির কলার বিভিন্ন আলাদা আলাদা নাম রয়েছে। আমাদের দেশে সাগর কলা, চাম্পা কলা, সবড়ি কলা, কাঠালী কলা ও বাংলা কলা বেশ জনপ্রিয়। সাধারণত উষ্ণ জলবায়ু সম্পন্ন দেশসমূহে কলা ভাল জন্মায়। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াই কলার উৎপত্তিস্থল হিসাবে পরিগণিত। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বহু দেশে কলা অন্যতম প্রধান ফল। বাংলাদেশের নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, ময়মনসিংহ, যশোর, বরিশাল, বগুড়া, রংপুর, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, প্রভৃতি এলাকায় শত শত বৎসর যাবৎ ব্যাপকভাবে কলার চাষ হয়ে আসছে।

কলার প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে বাধ্য। মুহূর্তের মধ্যে এনার্জি পেতে কলার জুরি মেলা ভার। কিন্তু তা ছাড়াও যে প্রচুর কাজ করে কলা। জেনে নিন কলার বহুগুণ-

পুষ্টিবিদরা বলছেন, কলার পুষ্টিগুণ এত বেশি যে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে এ ফলের বিকল্প খুঁজে পাওয়া যাবে না। নিয়মিত একটি কলা খাওয়ার অভ্যাস অনেক দুরারোগ্য রোগ থেকে দূরে রাখে।

একটি কলা শরীরের নিস্তেজভাব মুহূর্তের মধ্যেই দূর করতে সক্ষম। শারীরিক দুর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে গ্যাস, হজমে সমস্যার দারুণ সমাধান হতে পারে।

কলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। তাই যারা ওজন কমাতে চান তারা হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারেন এই হলুদ ফলকে। কারণ একটি কলা খাওয়ার পর পেট ভরে যাওয়ার অনুভূতি হয়। যা অন্য কোনো খাবার গ্রহণ করা থেকে আপনাকে সহজেই বিরত রাখতে পারবে।

রক্তস্বল্পতা দূর করতে, হাড়কে মজবুত করে তুলতে, হবু মা ও নতুন শিশুর সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে পারে এই কলা। একটি কলা সারা দিনের মানসিক উদ্বেগকে এক নিমিষেই দূর করতে পারে। পটাশিয়ামসমৃদ্ধ কলার রয়েছে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা।

কলাতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ফ্রি রেডিক্যাল থেকে ত্বককে রক্ষা করে তেমনি কলায় উপস্থিত ডোপামিন দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ হটায়। তাই কলাকে স্ট্রেস বাস্টার বলা হয়।

কলার মধ্যে থাকা ট্রিপটোফ্যান প্রোটিন মানুষের শরীরে পরিণত করে সিরোটোনিন হরমোনে। সিরোটোনিন হরমোন অফ হ্যাপিনেস নামে পরিচিত। শরীরে এই হরমোনের মাত্রা বাড়লে মুড ভাল হয়ে রিল্যাক্স বোধ করে মানুষ। মুড অফ একটি অতি পরিচিত প্রি-মেন্সট্রয়াল সিনড্রোম। কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি৬ শরীরে গ্লুকোজের সামঞ্জস্য বজায় রেখে মুড ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

কলার মধ্যে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি অথচ নুনের মাত্রা কম থাকায় উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা রুখতে পারে কলা। ইউ ফুড ও ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কলার এই গুণের কথা মাথায় রেখে স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধে কলার ব্যবহার সুপারিশ করেছে।

মশার কামড়ে ফুলে, লাল হয়ে ওঠা ত্বকের যত্ন নিতে ক্রিম বা অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করার আগে কলার খোসা ঘষে দেখুন ত্বকের ফুলে ওঠা অংশে।

কলা নিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি এবার জানুন। কলায় লেগে থাকা সুতার মতো অংশটি নিশ্চয়ই চিনেন? এটি মূলত কলার এক ধরনের টিস্যু। যার নাম ফ্লোয়েম বান্ডেল।

খোসা ছাড়ানোর পর কলায় ফ্লোয়েম বান্ডেল লেগে থাকতে প্রায়ই দেখা যায়। অনেকে এই টিস্যু খেয়ে ফেলেন আবার অনেকে খান না। কিন্তু আপনি কি জানেন, এটি সুস্বাদু না হলেও খাওয়া কতটা জরুরী?

কলার এই অংশটি খাওয়া শুধু নিরাপদই নয়, স্বাস্থ্যকরও। যুক্তরাষ্ট্রের নিউট্রিশন রিসার্চের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. নিকোলাস ডি গিলিট আমেরিকার গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কলার ফ্লোয়েম বান্ডেল অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর একটি খাবার।

তিনি আরও বলেন, এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফাইবার। তাই একটি পুরো কলার চেয়ে ফ্লোয়েম বান্ডেলেই সব পুষ্টিগুণ লুকিয়ে রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। যা শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে।

এছাড়া কলার খোসায় ট্রাইপটোফেন রয়েছে যা একটি প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিড। এটি মস্তিষ্কের সুখী হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে।

কলার খোসার মধ্যে রয়েছে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় আঁশ। দ্রবণীয় আঁশ শরীরের লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন, অর্থাৎ বাজে কোলেস্টেরলকে কমাতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা আঁশ হজমে সাহায্য করে, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

ইথিলিন নামক একটি বায়বীয় হরমোন যে কোনও ফল দ্রুত পাকিয়ে দেয়। কলার কাঁদিতে লেগে থাকে সেই হরমোন। এবার কলা যদি মাটিতে নামিয়ে রাখা হয় তাহলে হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। কলা পাকে তাড়াতাড়ি। কিন্তু কলা যদি ঝুলিয়ে রাখা হয় তাহলে এই সমস্যা অনেকটাই কম হয়। কম পরিমাণ ইথিলিন গ্যাস নির্গত হয়। তাই যে কোনও দোকানে কলা ঝোলানো থাকে।

যদি কলা ঝুলিয়ে না রাখতে চান তাহলে তা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়েও মুড়ে রাখতে পারেন। এতে কলা দ্রুত পাকে না। ফলে কালো কোনও দাগ-ছোপও ধরে না। সেই সঙ্গে ইথিলিনও কম পরিমাণে নির্গত হয়।

অনেকের ধারণা ফ্রিজে রাখলে কলা তাড়াতাড়ি পেকে যায়। কিন্তু একমাত্র ফ্রিজেই কলা বেশিদিন ভাল থাকে। কাঁচা কলা অবশ্য ঘরের সাধারণ তাপমাত্রাতেই রাখুন। এতে তা বেশিদিন ভাল থাকবে। একসঙ্গে সব কলা রেখে দেবেন না। এতে কলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

ডায়েটেশিয়ানদের মতে, যারা কলা খেতে পছন্দ করেন তারা খাবারের তালিকায় কলা রাখতে পারেন। কলা ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ