সর্বশেষ
মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে নবীজির পদক্ষেপ
ভূমি আপিল বোর্ডে চাকরির সুযোগ, আবেদন করুন দ্রুত
আমি এখনো বিয়েতে বিশ্বাস করি: শ্রাবন্তী
ইসরাইলি হামলায় একদিনে নিহত আরও ১০০ ফিলিস্তিনি
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৫১৬১৫ হাজি
আজ থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু
জ্বর জ্বর ভাব, কিন্তু জ্বর নেই, কেন এমন হয়?
যেসব অভ্যাস আপনার মেধা বাড়িয়ে তুলবে
ফ্লোরাল পোশাকের নানা লুকে আবেদন ছড়াচ্ছেন তারকারা
করোনা ও ডেঙ্গু একসঙ্গে হলে কী করবেন
হোয়াটসঅ্যাপে এআই দিয়ে ছবি বানাবেন যেভাবে
রাত পোশাকেই গ্ল্যামার: ২০২৫-এর স্ট্রিট ফ্যাশনে জায়গা করে নিচ্ছে লাক্সারি স্লিপওয়্যার
নিজের কাজ ফেলে ট্রলি ঠেলে বেড়ান কর্মচারীরা, ব্যবস্থা নেবে দুদক
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে ঐকমত্যের সম্ভাবনা
যেসব প্রশ্ন কখনোই করবেন না চ্যাটজিপিটিকে

নিজের শরীরে নিজেই আঘাত করে শিশুটি, অর্থের অভাবে হচ্ছে না চিকিৎসা

অনলাইন ডেস্ক

সুরাইয়ার বয়স এখন ছয় বছর। এ বয়সে তার সমবয়সীদের সঙ্গে খেলাধুলা করার কথা। মুক্তভাবে ছুটে বেড়ানোর কথা। স্কুলে যাওয়ার কথা। জন্মের দুই দিন পরই তার নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। এরপর সে বড় হতে থাকে আর অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। বছর পাঁচেক ধরে হাত ও হাঁটু দিয়ে সুরাইয়া নিজের শরীরে নিজেই আঘাত করে। অর্থের অভাবে হচ্ছে না চিকিৎসা।

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের কোনাডহর এলাকায় সুরাইয়াদের বাড়ি। সে মো. সুহেল মিয়া ও লাকি আক্তার দম্পতির মেয়ে। সুরাইয়াকে সার্বক্ষণিক চোখে চোখে রাখতে হচ্ছে। কখনো বা বেঁধে রাখতে হচ্ছে তার হাত-পা। পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের ভাষ্য, অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মেয়েটির এ অবস্থা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কোনাডহর গ্রামে সুরাইয়াদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সুরাইয়াকে কোলে নিয়ে তার দাদা আবদুর রহিম বসে আছেন। সেখানে আলাপকালে আবদুর রহিম বলেন, ‘সুহেলের দুই সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে সুরাইয়ারে নিয়ে খুবই সমস্যায় পড়ছি। সে কথা কইতে পারে না। নিজের শরীরে নিজেই আঘাত করে। যখন যা মন চায়, তা-ই করে সে। সারাক্ষণ তারে কোলে লইয়া থাকতে হয়। সময় না পাইলে বাইন্ধা রাখা ছাড়া কোনো উপায় নাই। তার মা–বাবা আমরার কাছে তারে রাইখ্খা চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে ঢাকায় কাজ করতাছে। কিন্তু এহনো টাকা জোগাড় হইতাছে না।’

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জন্মের পর সুরাইয়ার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট হলে তাকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। এর পর থেকে তার অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ করা যায়। আবারও একই হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু হতদরিদ্র পরিবারটির সামর্থ্য না থাকায় সুরাইয়াকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুটির অস্বাভাবিক আচরণ বাড়তে থাকে। সে নিজের হাত ও হাঁটু দিয়ে নিজের শরীরে আঘাত করতে থাকে। কখনো নিজেই মাথা চাপড়ায়, হাত কামড়ায়। যেদিকে খুশি চলে যেতে চায়। এ কারণে তাকে সার্বক্ষণিক চোখে চোখে রাখতে হয়।

প্রতিবেশী আল মামুন বলেন, পরিবারটি দরিদ্র হওয়ায় বিরল রোগে আক্রান্ত মেয়েটির চিকিৎসা করাতে পারছে না। প্রতিবেশী হয়ে এ দৃশ্য দেখে খুবই খারাপ লাগে। সরকারিভাবে যদি মেয়েটির চিকিৎসা করা যেত, অথবা বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি এগিয়ে আসতেন, তাহলে হয়তো শিশুটি রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসত।

মুঠোফোনে জানতে চাইলে সুরাইয়ার বাবা সুহেল মিয়া বলেন, ‘মেয়েডার চিকিৎসার টেহা জোগাড় করতে আমি ঢাহায় ভ্যান চালাই। কিন্তু ঢাহায় বাসাভাড়াসহ সব মিলাইয়া অহন সংসারই চলতাছে না। তাই অসুস্থ মেয়েডার চিকিৎসা করাইতে পারতাছি না। ডাক্তার কইছিল, চিকিৎসা করাইলে সে বালা হইয়া যাইব।’

সুরাইয়ার মা লাকি আক্তার মুঠোফোনে বলেন, ‘মেয়েডারে লইয়া অনেক কষ্টে আছি। মা হইয়া মেয়ের কষ্ট আর সহ্য হয় না। চিকিৎসার টেহার লাইগ্গা ঢাহায় কাম করতাছি। কিন্তু অভাব মিটতাছে না। তাই ডাক্তার দেহাইতে পারি না। যদি সরকার বা কেউ দয়া কইরা আমার মেয়েডার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা কইরা দিত, তাইলে সে সুস্থ হইয়া যাইত।’

পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খবিরুল আহসান বলেন, শিশুটির অসুস্থতার কথা তিনি শুনেছেন। শিশুটি যাতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পায়, সে ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনলাইন ডেস্ক

সম্পর্কিত খবর

এই পাতার আরও খবর

সর্বশেষ